কালোজিরার উপকারিতা, অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম
কালোজিরা একটি বীজ যা মশলা,ঔষধ ও তৈল হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। এছাড়া চিবিয়ে চিবিয়ে ও খাওয়া যায়। কালোজিরা অনেক পুষ্টিগুন সম্পূর্ণ।
বিশেষ করে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ জন্য ব্যবহার করে থাকে।কালোজিরা খেলে কি কি উপকার হয় তা নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
কালোজিরা সম্পর্কে ইসলাম কি বলে
প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ কালোজিরা ব্যবহার করে আসছেন। কালোজিরাকে অনেকে কালোহিরা বলে আখ্যায়িত করে খাকেন।কারণ কালোজিরা আমাদের শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আসুন জেনে নেই কালোজিরা সম্পর্কে হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) কি বলেছেন।
- হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্নিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সাঃ) কে বলতে শুনিয়াছি যে, এ কালোজিরা মরণ ব্যতিত সকল রোগের ঔষধ। (সহীহ বুখারীঃ ৫৬৮৭ হাদিস)।
- হযরত আবু হুরাইরা থেকে বর্নিত রাসুল সাঃ এরশাদ ফরমায়েছেন যে, তোমরা এই কালোবীজ ( কালোজিরা) নিজেদের জন্য ব্যবহারকে বাধ্যতামুলক করে নাও।কেননা মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের নিরাময় এর মধ্যে রহিয়াছে (সহিহ মুসলিম)।
কালোজিরায় কি কি উপাদান আছে
কালোজিরায় রয়েছে অনেক উপকারী উপাদান। সেগুলো হলোঃ
- পটাসিয়াম
- ক্যালসিয়াম
- ম্যাগনেসিয়াম
- সেলেনিয়াম
- ফসফরাস
- জিংক
- আয়রন
- লৌহ
- কার্বোহাইড্রেট
- ফসফেট
- ভিটামিন-এ
- ভিটামিন -বি,বি২
- ভিটামিন -সি
- নিয়াসিন
- নাইজেলোন
- থাইমোকিনোন
- অলিক এসিড
- লিনোলিক এসিড।
কালোজিরার পুষ্টি উপাদান (প্রতি ১ চা চামচ বা প্রায় ৬ গ্রাম):
পুষ্টি উপাদান | পরিমাণ | দৈনিক প্রয়োজনীয়তার শতকরা হার |
---|---|---|
ক্যালরি | ২৫ কিলোক্যালরি | ১% |
মোট ফ্যাট | ২.৫ গ্রাম | ৪% |
স্যাচুরেটেড ফ্যাট | ০.৫ গ্রাম | ৩% |
মোট কার্বোহাইড্রেট | ৩.৮ গ্রাম | ১% |
ডায়েটারি ফাইবার | ২.১ গ্রাম | ৮% |
প্রোটিন | ১.৩ গ্রাম | ২% |
আয়রন | ১০.৫ মিলিগ্রাম | ৫৮% |
ক্যালসিয়াম | ৭৭ মিলিগ্রাম | ৮% |
পটাশিয়াম | ৪৪৮ মিলিগ্রাম | ১৩% |
সোডিয়াম | ১৩ মিলিগ্রাম | ১% |
বিশেষ দ্রষ্টব্য
- দৈনিক প্রয়োজনীয়তার শতকরা হার একটি ২০০০ ক্যালোরি ডায়েটের উপর ভিত্তি করে তৈরি।
- কালোজিরায় থাইমোকুইনোন নামক যৌগ থাকে, যার শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রদাহবিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
- কালোজিরাতে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও খনিজ পদার্থও রয়েছে যেমন জিংক, কপার এবং ফসফরাস ।
কালোজিরার উপকারিতা
ওজন কমায়
কালোজিরায় রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি।যা আমাদের শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে।কালোজিরার তৈল খেলেও শরীরের ওজন কমে। নিয়মিতভাবে কালোজিরা ও কালোজিরার তৈল সেবন করলে শরীরের ওজন কমতে সাহায্য করে। শরীরের ওজন কমাতে কালোজিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
চুল পড়া কমায়
কালোজিরার তৈল মাথায় ব্যবহার করলে চুলের গোড়া মজবুত করে এবং চুল পড়া বন্ধ করে। আজকাল প্রায় অনেকের চুল পড়ে মাথায় টাক হয়ে যায়।এই সমস্যা দূর করতে নিয়মিত কালোজিরার তৈল মাথায় ব্যবহার করলে চুল পড়া বন্ধ হবে ও চুলের গোড়া মজবুত হবে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে ইন্শাল্লাহ।
গ্যাস্টিকের সমস্যা দূর করে
বর্তমানে অধিকাংশ মানুষ ভেজাল খাবার ও অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার খেয়ে থাকে। যার ফলে গ্যাস্টিক হয়ে থাকে। এই গ্যাস্টিক থেকে বাঁচতে কালোজিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এক গ্লাস দুধের সাথে পরিমাণ মতো কালোজিরার তৈল মিশিয়ে পান করতে হবে।দিনে কয়েকবার খেতে হবে। এভাবে নিয়মিত ১৫-২০দিন খেলে গ্যাস্টিকের সমস্যা দূর হবে ইন্শাল্লাহ।
দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে
চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে কালোজিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নিয়মিত কালোজিরা খেলে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পাশাপাশি চোখের লাল দাগ ও চোখের নিচের কালো দাগ দূর হয়।
ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি
মুখের দাগ ও ব্রণ দূর করতে কালোজিরা কার্যকারী ভূমিকা রাখে। লেবুর রস সাথে কালোজিরার তৈল মিশিয়ে একটি পেষ্ট তৈরি করে, নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মুখের দাগ ও ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে।
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
কালোজিরায় রয়েছে অনেক ঔষধি গুণ, যা শরীরকে সুস্থ সবল রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত কালোজিরা খেলে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।এরজন্য কালোজিরাকে মহাঔষধ বলা হয়।
সর্দি কাশি দূর করে
বর্তমানে ঠান্ডা কাশি নিয়মিত একটি রোগের নাম।বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের হয়ে থাকে।সর্দি কাশি থেকে মুক্তি পেতে এক চা চামচ কালোজিরার তৈল সাথে পরিমাণ মতো মধু মিশিয়ে দিনে দুই থেকে তিনবার খেতে হবে। এছাড়া এক চামচ কালোজিরার তৈল সাথে পরিমাণ মতো মধু ও তুলসীপাতার রস মিশিয়ে প্রতিদিন দুই থেকে তিন বার খেলে সর্দি, কাশি ও জ্বর থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে ইন্শাল্লাহ।
পেটের ব্যাথা দূর করে
অনেকের প্রায় সময়ই পেটের ব্যাথা হয়ে থাকে।যারা পেটের ব্যাথায় ভুগছেন তারা নিয়মিত কালোজিরা খেলে পেটের ব্যাথা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। আসুন জেনে নেই কিভাবে খাবেন, প্রথমে কালোজিরা ভেজে পাউডার তৈরি করুন। তারপর এক গ্লাস গরম দুধের সাথে পরিমাণ মতো কালোজিরা পাউডার মিশিয়ে দিনে দুই থেকে তিনবার খান।এভাবে নিয়মিত সাতদিন খেলে পেটের ব্যাথা দূর হবে ইন্শাল্লাহ।
ডায়েটে কালোজিরা
যারা ডায়েট করছেন তারা নিয়মিত কালোজিরা খেতে পারেন।ডায়েটে কালোজিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আসুন জেনে নেই কিভাবে খাবেন, টক দইয়ের সাথে মিশিয়ে, মধুর সাথে মিশিয়ে, রান্নার সাথে, রটি বানানোর সময়ও কালোজিরা দিয়ে ইত্যাদি ভাবে কালোজিরা খাওয়া যায়।
মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি
কালোজিরা মায়ের বুুকের দুধ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মায়েরা যদি নিয়মিত কালোজিরা পাউডার তৈরি করে, সেই পাউডার(৫-১০গ্রাম) দুধে সাথে মিশিয়ে খায় তাহলে মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি পাবে।এভাবে দশ থেকে বিশ দিন খেলে মায়ের দুধ প্রচুর বৃদ্ধি পাবে।
অপারেশনের দাগ দূর করে
সিজার বা অপারেশন করার ফলে দাগ পড়ে যায়। এই দাগ দূর করতে কালোজিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কেউ যদি নিয়মিত কালোজিরা খায় তা হলে অপারেশন বা সিজারের দাগ সহজে দূর হয়।
ক্যান্সার প্রতিরোধ
আমরা সবায় জানি কালোজিরাতে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি মাইকোটিক আছে।যা শরীরের ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।এছাড়া কালোজিরা শরীরের টিউমার প্রসমিত করতে সাহায্য করে।
পাইলস প্রতিরোধ
এক চামচ কালোজিরা তৈল ও এক চামচ তিলের সাথে এক চামচ মাখন মিশিয়ে, দিনে দুই থেকে তিন বার খেলে পাইলস সমস্যা দূর করে।
রান্নার স্বাদ বৃদ্ধি
রান্নার সাথে কালোজিরা ব্যবহার করলে রান্নার স্বাদ কয়েক গুণ বেড়ে যায় এবং খাবারের পুষ্টিগুনও বেড়ে যায়। খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি করতে মশলার সাথে কালোজিরা ব্যবহার করতে পারেন।
হাড় ব্যথা
বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গার হাড়ের ব্যথা দেখা দেয়।হাড়ের বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা উঠে।এই ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে কালোজিরার তৈল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শরীরের যে অংশে ব্যথা অনুভব হয় সে স্থানে কালোজিরার তৈল নিয়ে মালিশ করলে ব্যথা দূর হবে। ব্যথা দূর করতে নিয়মিত কালোজিরার তৈল দিয়ে মালিশ করতে হবে।
দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি
কালোজিরা শিশুদের দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি করে থাকে।শিশুদের খাবারের তালিকায় কালোজিরা রাখতে পারেন কারণ কালোজিরা শিশুদের দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শিশুদের দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি করতে কালোজিরার তৈলও ব্যবহার করতে পারেন।
চর্মরোগ থেকে মুক্তি
যাদের চর্মরোগ আছে,যে যে স্থানে হয়েছে সেখানে কালোজিরার তৈল ব্যবহার করতে পারেন।কালোজিরার তৈল সাথে হলুদের রস ও পরিমাণ মতো মধু মিশিয়ে নিয়মিত ব্যবহার করলে চর্মরোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে ইন্শাল্লাহ।
পিরিয়ড সমস্যা
বর্তমানে মহিলাদের পিরিয়ড এর সমস্যা একটি বড় সমস্যা। পিরিয়ডের সমস্যায় প্রায় মহিলারা ভুগছেন। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে কালোজিরার তৈল সাথে কাঁচা হলুদের রস মিশিয়ে দিনে দুই থেকে তিন বার খেতে হবে।নিয়মিত খেলে আশাকরি পিরিয়ড এর সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
লিভার ভালো রাখতে
কালোজিরায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সডেন্ট যা লিভারকে সুস্থ রাখতে কার্যকারী ভুমিকা রাখে। এই অ্যান্টিঅক্সডেন্ট আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে থাকে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
গরম চা বা পানির সাথে কালোজিরা মিশিয়ে খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। উচ্চ রক্তচাপ থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত কালোজিরা সেবন করতে হবে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ
বর্তমানে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে,মরণ ব্যধিতে পরিণত হয়েছে। কালোজিরা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এক কাপ চায়ের সঙ্গে কালোজিরার তৈল মিশিয়ে নিয়মিত প্রতিদিন সকালে খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ হয়।
পেট খারাপ
অনেকের ঘন ঘন পেটের সমস্যা হয়ে থাকে।পেট খারাপ থেকে পরিত্রাণ পেতে দুধের সাথে কালোজিরার গুড়া মিশিয়ে নিয়মিত সেবন করতে হবে। নিয়মিত সাতদিন সেবন করলে পেট খারাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে ইন্শাল্লাহ।
দাঁত ব্যথা
কুসুম গরম পানির সাথে কালোজিরা মিশিয়ে, সেই পানি দিয়ে কুলি করলে ব্যথা কমে যাবে। দাঁতের ব্যথার সাথে সাথে মুখের জিবাণু ধ্বংস করে ফেলে।
কালোজিরার তৈলের উপকারিতা
কালোজিরার তৈল এর অসংখ্য উপকারিতা রয়েছে। আসুন জেনে নেই কালোজিরার তৈল আমাদের শরীরের কি কি উপকারিতা হয়?
- স্মরণ শক্তি বৃদ্ধি হয়।
- মাথা ব্যথা দূর হয়।
- সর্দি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- বাতের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- চর্মরোগ প্রতিরোধ।
- হার্টের বিভিন্ন রোগ থেকে বাঁচা যায়।
- ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে।
- অর্শ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানি থেকে বাঁচা যায়।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে।
- অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা দূর করে।
- শিশুদের মায়ের দুধ বৃদ্ধি করে।
- ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
- গ্যাস্টিকের সমস্যা দূর করে।
- জন্ডিস ও লিভার ভালো রাখে।
- শিশুদের দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি করে।
- হাড়ের ব্যথা দূর করে।
- হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
- রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধি করে।
- দাঁত ব্যথা দূর করে।
- চুল পড়া বন্ধ করে।
- চোখের সমস্যা দূর করে।
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে ইত্যাদি।
কালোজিরা খায়ার নিয়ম
কালোজিরা অনেক ভাবে সেবন করা যায়। আসুন জেনে নেই কিভাবে কালোজিরা খাওয়া যায়।
- কালোজিরা কাঁচা চিবিয়ে চিবিয়ে খাওয়া যায়।
- কালোজিরা শুকিয়ে গুড়া করে খাওয়া যায়।
- কালোজিরা তৈল খাওয়া যায়।
- কালোজিরা বত্তা বানিয়ে খাওয়া যায়।
- কালোজিরা ও পিয়ারা পাতার রস মিশিয়ে খাওয়া যায়। এলার্জি রোগীদের জন্য বেশ উপযোগী।
- কালোজিরা তৈল সাথে পুদিনাপাতা রস ও কমলার মিশিয়ে খাওয়া যায়। দুচিন্তা রোগীদের জন্য বেশ উপযোগী।
- কালোজিরা ও কাঁচা হলুদের রস মিশিয়ে খাওয়া যায়।
- তুলসীপাতা রস ও কালোজিরা মিশিয়ে খাওয়া যায়।
- মধু ও কালোজিরা মিশিয়ে খাওয়া যায়। যাদের সর্দি তারা খেতে পারেন।
- কালোজিরার তৈল সাথে রসুন ও মধু মিশিয়ে খাওয়া যায়। মাথা ব্যথা দূর করতে কালোজিরা ও রসুন মিশিয়ে খেতে পারেন ইত্যাদি।
কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: কালোজিরায় থাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
- হজমশক্তি উন্নত করে: কালোজিরায় থাকে থাইমোকুইনন নামক একটি উপাদান, যা হজমশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে।
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে: কালোজিরা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে: কালোজিরা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
- কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়: কালোজিরা খারাপ কোলেস্টেরলের (LDL) মাত্রা কমাতে এবং ভালো কোলেস্টেরলের (HDL) মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
- ওজন কমাতে সাহায্য করে: কালোজিরা বিপাক ক্রিয়া বৃদ্ধি করে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে: কালোজিরায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
- চুলের গোড়া শক্ত করে: কালোজিরা চুলের গোড়া শক্ত করে চুল পড়া রোধ করে।
- ত্বকের যত্ন নেয়: কালোজিরা ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন ব্রণ, ফুসকুড়ি, একজিমা ইত্যাদি দূর করতে সাহায্য করে।
কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার নিয়ম
- প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক চা চামচ কালোজিরা চিবিয়ে খান।
- চাইলে আপনি মধুর সাথেও কালোজিরা খেতে পারেন।
- কালোজিরা গরম পানি দিয়েও খেতে পারেন।
কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার কিছু সতর্কতা
- গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের কালোজিরা খাওয়া উচিত নয়।
- যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা কালোজিরা খাওয়ার আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
- কালোজিরা অ্যালার্জি থাকলে কালোজিরা খাওয়া উচিত নয়।
কালোজিরার অপকারিতা
কালোজিরা খেলে যেমন উপকার আছে তেমন অতিরিক্ত কালোজিরা খেলে ক্ষতিও আছে। আসুন জেনে অতিরিক্ত কালোজিরা খেলে কি কি ক্ষতি হয় এবং কাদের জন্য কালোজিরা ক্ষতিকর।
- অতিরিক্ত কালোজিরার তৈল ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বকে এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
- অতিরিক্ত কালোজিরা খেলে রক্ত জমাট বাধা কমে যায় ফলে রক্তপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।অতিরিক্ত কালোজিরা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
- অতিরিক্ত কালোজিরা খেলে রক্তের শর্করা বৃদ্ধি পায়। এরজন্য যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে কালোজিরা খাবেন।
- গর্ভাবস্তায় কালোজিরার তৈল ব্যবহার করা যাবে না।
- দুই বছরের কম বাচ্চাদের কালোজিরার তৈল খাওয়ানো নিষেধ।