কাবাব চিনির উপকারিতা, অপকারিতা এবং ব্যবহারবিধি
কাবাব চিনি–জীবনী শক্তি সতেজ কারক,যৌন শক্তি বর্ধক। স্বপ্নদোষ, শুক্রমেহ,বাত প্রশমক,কফ নিঃসারক এবং মূত্রবর্ধক। মূত্রাশয়ে শক্তি ও প্রস্রাব বর্ধক,পাথুরী নাশক এবং বহুমূত্র ও বিছানায় প্রস্রাবরোধকারক।প্লীহা রোগ, গলা ব্যাথা ও হৃদকম্প দূর করে এবং দাঁতের মাড়ি সবল করে।
কাবাব চিনির উপকারিতা
কাবাব চিনি শরীরের প্রধান অঙ্গগুলো শক্তিবর্ধক হিসেবে কাজ করে, বিশেষ করে জীবনীশক্তি সতেজ করে ও যৌনশক্তি বাড়ায়। যকৃৎ ও পাকস্থলীর শক্তিবর্ধক এবং বায়ুনাশক। পুরনো মাথাব্যথা ও প্রতিবন্ধকতা দূর করে।
প্লীহা, গলাব্যথা ও হৃৎকম্প দূর করে। দাঁতের মাড়ি সবল করে। মূত্রাশয়ের শক্তি ও প্রস্রাববর্ধক, পাথুরিনাশক। মুখের দুর্গন্ধ ও কণ্ঠস্বর পরিষ্কারক। মূত্রনালির প্রদাহ, গনোরিয়া, ক্ষত ও প্রস্রাবের জ্বালাপোড়ায় বিশেষ উপকারী।
পরিচিতি
‘কাবাব চিনি’ এক প্রকার লতানো উদ্ভিদের ফল বিশেষ, এ উদ্ভিদটি অন্য বৃক্ষকে আশ্রয় করে বেড়ে উঠে। কান্ড বাঁকা,শাখার বিপরীত দিকে অযুগ্মভাবে পাতা জন্মে।পাতা ৫/৬ ইঞ্চি লম্বা, অনেকটা ডিম্বাকৃতি, অগ্রভাগ সরূ এবং বৃন্তদেশ ক্রমশঃ সরূ।পাতা বহুশিরা বিশিষ্ট, পত্রদন্ডের প্রতিটি পর্ব থেকে একদিকে একটি করে পাতা বের হয় ।
ছোট ছোট গোলাকার ফল হয়। দেখতে গোলমরিচের ন্যায়।দু’ধরনের ফল হয়ে থাকে, এক প্রকার গোলমরিচ অপেক্ষা ছোট এবং অন্য প্রকার গোলমরিচ অপেক্ষা আকারে কিঞ্চিৎ বড় । তবে কাবাবচিনির বোঁটা লম্বা, বোঁটা ফলে লেগে থাকে কিন্তু গোল মরিচে তা থাকে না । ফলের রং কাল অথবা ধুসরবর্ণ ।ফলের মধ্যে একটি মাত্র বীজ থাকে । কাবাব চিনি সুগন্ধযুক্ত ও তীক্ষ্ণগন্ধ বিশিষ্ট।স্বাদ ঝাঁঝালো ও ঈষৎ তিক্ত।
ব্যবহার্য্ অংশ
ফল ও তৈল
সাধারণ ক্রিয়া
সাধারণ বলকারক, জ্বর প্রশমক ,মুখের ক্ষতনাশক, মুখের জড়তা নিবারক, রুচিবর্ধক, কফ নিঃসারক ও মুখের দুর্গন্ধনাশক । তাছাড়া যকৃতের দুর্বলতা, স্বরভঙ্গ, মাথাব্যথা, মূত্রকৃচ্ছ্রতা, গণোরিয়া, যৌন দুর্বলতা, অর্শ, শ্বেতপ্রদর, বুকজ্বালা, পেটফাঁপা, মূত্রনালীর প্রদাহ প্রভৃতি রোগ নিরসনে কপচিনি অত্যন্ত উপকারী।
আময়িক ব্যবহার
আদিকাল হতে ইউনানী ও আযুর্বেদিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিভিন্ন ওষধ তৈরির ক্ষেত্রে কপচিনি ব্যাপক ব্যবহৃত হয়ে আসছে।কপচিনি ওষুধি গুণাগুণ জানতে পেরে ইদানিং আমাদের দেশে এর চাষ হচ্ছে। জানায় কপচিনি জীবনী শক্তি সতেজ রাখে, পুরাতন মাথাব্যথা প্রশমিত করে , মুখের দুর্গন্ধ দূর করে এবং কন্ঠস্বর পরি্ষ্কার রাখে । মূত্র পাথুরী রোগে কপচিনির ব্যবহার দেখা যায়।
তাছাড়া হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা বিজ্ঞানেও কপচিনি অত্যন্ত নির্ভরযোগ্যতার সাথে ব্যবহার হয়ে আসছে।কপচিনি থেকে যে টিংচার প্রস্তুত করা হয়, তা কিইবেবা নামে মসধিক পরিচিত । মূত্রপথের মিউকাস মেম্রেনের উপর এর প্রধান ক্রিয়া ।এছাড়া স্নায়ুবিক দূর্বলতার জন্য বারবার মূত্র বেগ, গণোরিয়া ইউরেথ্রাইটিস, সিস্টিইসিস, প্রোস্টাইটিস, হিমাচুরিয়া, মহিলরাদের শ্বেতপ্রদর, স্বরভঙ্গ, সর্দি প্রভৃতি রোগ নিরসনে প্রচুর ব্যবহৃত হয় ।কপচিনি সম্বলিত ইউনানী চিকিৎসা বিজ্ঞানে অনেক ওষুধ তৈরি করা হয়। তবে এখানে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ওষুধের নাম উল্লেখ করা গেল । যেমনঃ মা’জুন আন্তকী, মা’জুন সীর, শরবত আমলা, কুরছ ওশবা, হাব্বে সুআল, সফুফ ছন্দলীন, সফুফ কলয়ী কুশতা প্রভৃতি
সেবন মাত্রা
১ হতে ৩ গ্রাম পর্যন্ত সেবন করা যায়।
প্বার্শপ্রতিক্রিয়া ও বিরুপ ক্রিয়া
অতিরিক্ত মাত্রায় কপচিনি খেলে মূত্রথলির সমস্যা হতে পারে ।
খাওয়ার সাধারণ নিয়ম
সকালে হাফ চা চামচ ও রাতে হাফ চা চামচ কাবাবচিনি চূর্ণ আধা কাপ হালকা গরম পানির সাথে মিশিয়ে খাবেন।
মুখ ও দাতের মাড়ির সমস্যায় আস্ত ২ টা কাবাব চিনি সকালে ও রাতে চিবিয়ে খাবেন,ঝাঁজ সহ্য না হলে সাথে হালকা চিনি মিশিয়ে খাবেন।
অথবা চিকিৎসকের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে খাবেন।