লিভারে চর্বি হলে কি খাওয়া উচিত নয়
লিভার আমাদের শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি রক্তকে বিশুদ্ধ করা, খাবার হজমে সাহায্য করা, আমাদের শরীরকে রোগের বিরুদ্ধে শক্তিশালী করা – এইসব গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলি সুচারুভাবে সম্পন্ন করে থাকে।
তবে, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত মদ্যপান ও জীবনযাত্রার নানা অসঙ্গতির কারণে লিভারে চর্বি জমা হওয়া একটি বহুল প্রচলিত সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় “ফ্যাটি লিভার ডিজিজ” বলা হয়। এই সমস্যাটি নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে লিভারে প্রদাহ, এমনকি লিভার সিরোসিস পর্যন্ত হতে পারে।
ফ্যাটি লিভার হলে স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা ও ডায়েট মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি। এখানে আমরা গভীরভাবে আলোচনা করবো, লিভারে অতিরিক্ত চর্বির সমস্যা থাকলে কোন কোন খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
ফ্যাটি লিভার রোগীদের জন্য খাদ্যতালিকা
লিভার আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পাদন করে। ফ্যাটি লিভার রোগ হলো লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমা হওয়ার একটি অবস্থা। এটি নিয়ন্ত্রণ না করলে লিভারের ক্ষতি হতে পারে।
ফ্যাটি লিভার রোগীদের জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে কিছু খাবারের তালিকা দেওয়া হল যা ফ্যাটি লিভার রোগীদের এড়িয়ে চলা উচিত:
অতিরিক্ত তেল-মশলাযুক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার
- ফাস্ট ফুড
- তেলে ভাজা খাবার
- পরোটা
- লুচি
- চপ
- সিঙ্গারা
- চিকেন ফ্রাই
- ফ্রেঞ্চ ফ্রাই
এই খাবারগুলোতে অতিরিক্ত পরিমাণে ক্ষতিকারক ফ্যাট ও ক্যালোরি থাকে যা লিভারে চর্বি জমার প্রবণতা বাড়িয়ে তোলে।
মিষ্টি জাতীয় খাবার এবং অতিরিক্ত চিনি
- মিষ্টি
- ক্যান্ডি
- কুকিজ
- সোডা
- অতি মিষ্টি ফল
চিনিতে থাকা ফ্রুক্টোজ লিভারে ফ্যাট জমার প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়।
অ্যালকোহল বা মদ জাতীয় পানীয়
মদ লিভারের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। ফ্যাটি লিভার রোগীদের মদ্যপান সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা উচিত।
গরু ও খাসির মাংস
লাল মাংসে প্রচুর পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে যা লিভারের রোগের অবস্থা আরও খারাপ করে। ফ্যাটি লিভার রোগীদের চর্বিহীন মুরগির মাংস বা মাছ খাওয়া উচিত।
প্রক্রিয়াজাত খাবার
- সাদা রুটি
- ভাত
- সুজি
- ময়দা
প্রক্রিয়াজাত খাবারে সাধারণত ক্যালরি ও ফ্যাট বেশি থাকে এবং ফাইবার কম থাকে। ফ্যাটি লিভার রোগীদের এই ধরণের খাবার কম খাওয়া উচিত।
অতিরিক্ত লবণ
লবণ আমাদের শরীরে অতিরিক্ত পানি ধরে রাখে, যা লিভারকে আরও চাপের মধ্যে ফেলে দেয়।
এই খাবারগুলো পরিহার করার পাশাপাশি ফ্যাটি লিভার রোগীদের নিম্নলিখিত বিষয়গুলো মেনে চলা উচিত:
- নিয়মিত ব্যায়াম করা
- স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা
- ধূমপান পরিত্যাগ করা
- ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়া
উপসংহার
ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য এসব খাদ্য পরিহার করার পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম, স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা বজায় রাখা, হালকা এবং ভারসাম্যপূর্ণ ডায়েট মেনে চলা, এবং প্রচুর পরিমাণে ফলমূল ও শাকসবজি খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোনো ব্যক্তির যদি ফ্যাটি লিভার রোগ নির্ণীত হয়, তবে দ্রুত একজন চিকিৎসক এবং ডায়েটিশিয়ানের সাথে যোগাযোগ করতে হবে জটিলতায় পড়ার আগেই।
অতিরিক্ত পরামর্শ: এই নিবন্ধটি সাধারণ সচেতনতা ও দিকনির্দেশনার জন্য রচিত। আপনার সুনির্দিষ্ট চিকিৎসার ব্যাপারে দয়া করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
One Comment