হার্ট দুর্বল হওয়ার লক্ষণ
হৃদরোগ আমাদের দেশে মৃত্যুর একটি অন্যতম কারণ। হৃদরোগের সবচেয়ে সাধারণ ধরন হলো করোনারি হার্ট ডিজিজ, যেখানে হার্টের পেশীতে রক্ত সরবরাহকারী ধমনীগুলি সংকুচিত হয়ে যায়।
সময়ের সাথে সাথে, এটি হার্টকে দুর্বল করে দিতে পারে এবং হার্ট ফেইলিউরের মতো গুরুতর সমস্যার কারণ হতে পারে।
হার্ট দুর্বলের চিহ্নগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে সূক্ষ্ম বা গুরুতরও হতে পারে। সমস্যাকে অবহেলা করলে গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।
কখন হার্ট দুর্বল হতে পারে
হার্ট আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা রক্ত পাম্প করে শরীরের সকল অংশে অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহ করে। বিভিন্ন কারণে হার্ট দুর্বল হতে পারে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:
করোনারি হার্ট ডিজিজ
- কারণ: CHD, ধমনীতে প্লাক বা চর্বি জাতীয় জমাটের ফলে সঙ্কীর্ণতা তৈরি হয়। প্লাক জমা হওয়া ধমনীকে শক্ত এবং সংকীর্ণ করে ফেলে, ফলে হার্টের পেশীতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের প্রবাহ কমে যায়।
- লক্ষণ: বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, ক্লান্তি, দুর্বলতা, মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি।
- হার্টের উপর প্রভাব: অক্সিজেন ও পুষ্টির অভাবে হৃৎপেশী ধীরে ধীরে দুর্বল হতে থাকে। হৃৎপিণ্ড তখন কার্যকরভাবে শরীরের চাহিদা অনুযায়ী রক্ত পাম্প করতে পারে না। দীর্ঘস্থায়ীভাবে রক্ত প্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হলে এক পর্যায়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও রয়েছে।
হার্ট অ্যাটাক
- কারণ: হার্ট অ্যাটাককে মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশনও বলা হয়। এটি হঠাৎ করে ঘটে থাকে। ধমনীতে শক্ত প্লাক ফেটে গিয়ে রক্ত জমাট বাধা সৃষ্টি করে। এই রক্ত প্রবাহ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেলে হৃৎপেশীর নির্দিষ্ট অংশ স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
- লক্ষণ: হঠাৎ তীব্র বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, ঘাম হওয়া, বমি বমি ভাব, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
- হার্টের উপর প্রভাব: ক্ষতিগ্রস্ত হৃৎপেশী রক্ত পাম্পকরার ক্ষমতা হারায়। এটি হার্টকে সার্বিকভাবে দুর্বল করে দেয় কারণ অন্যান্য অংশকে আরও বেশি কাজ করে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে হয়। হার্ট অ্যাটাকের পর হার্ট ফেইলিউর এবং অনিয়মিত হৃৎস্পন্দনের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।
উচ্চ রক্তচাপ
- কারণ: স্বাভাবিক চেয়ে দীর্ঘদিন ধরে রক্তচাপ বেশি থাকলে তাকে উচ্চ রক্তচাপ বলা হয়। ধমনীর দেয়ালের উপর বাড়তি চাপ পড়লে ধমনী ক্রমশ শক্ত ও সংকীর্ণ হতে থাকে, রক্ত প্রবাহ বিঘ্নিত হয়।
- লক্ষণ: মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, দৃষ্টি সমস্যা ইত্যাদি।
- হার্টের উপর প্রভাব: বাড়তি চাপ সামলাতে হার্টের পেশীগুলোকে আরও বেশি কাজ করতে হয়, ফলে সেগুলো মোটা হয়ে যায়। এই অবস্থায় হার্ট দুর্বল হয়ে রক্ত পাম্পের সক্ষমতা হারাতে থাকে। উচ্চ রক্তচাপ হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকিও বাড়ায়।
হার্ট ভালভের সমস্যা
- কারণ: হার্টের ৪টি ভালভ রক্তের একমুখী প্রবাহ বজায় রাখে। ভালভে জন্মগত ত্রুটি থাকতে পারে, নয়তো সংক্রমণের কারণে ভালভগুলোর ক্ষতি হতে পারে। যখন ভালভ সঠিকভাবে কাজ করে না, তখন রক্ত প্রবাহ ব্যহত হয়।
- লক্ষণ: শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, ক্লান্তি, দুর্বলতা, পা ফুলে যাওয়া ইত্যাদি।
- হার্টের উপর প্রভাব: ঠিকভাবে রক্ত সরবরাহ করতে না পেরে হার্টকে বেশি কাজ করতে হয়। ফলে হার্টের পেশী ক্রমশ দুর্বল হয়ে যায়। গুরুতর ভালভের সমস্যা হার্ট ফেইলিউরের কারণও হতে পারে।
ডায়াবেটিস
- কারণ: অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস দীর্ঘমেয়াদে ছোট এবং বড় রক্তনালীগুলির ক্ষতি করে। এটি করোনারি ধমনীগুলোকেও প্রভাবিত করে, যার ফলে হার্টের পেশীতে রক্ত সরবরাহ সীমিত হয়ে যায়।
- লক্ষণ: বারবার প্রস্রাব, তৃষ্ণার্ততা, ক্ষুধা বৃদ্ধি, শরীরের ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি।
- হার্টের উপর প্রভাব: রক্তনালীর ক্ষতি হার্টের দুর্বলতা এবং হার্ট ফেইলিউরের ঝুঁকি বাড়ায়। ডায়াবেটিস হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকিও উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে তোলে।
হার্টের পেশীর রোগ বা ভাইরাল সংক্রমণ
- কারণ: হার্টের পেশীর প্রদাহ (মায়োকার্ডাইটিস) বা হার্টের পেশীর দুর্বলতা (কার্ডিওমায়োপ্যাথি) হার্টকে দুর্বল করে দিতে পারে।
- লক্ষণ: বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, ক্লান্তি, দুর্বলতা, পা ফুলে যাওয়া ইত্যাদি।
উল্লেখ্য: উপরে উল্লেখিত লক্ষণগুলো দেখা দিলে দ্রুত একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত। ডাক্তার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা প্রদান করবেন।
শ্বাসকষ্ট
- বিভিন্নতা: শ্বাসকষ্ট বিভিন্নভাবে প্রকাশ পেতে পারে:
- শারীরিক পরিশ্রমের সময় শ্বাসকষ্ট: হাঁটা, সিঁড়ি বেয়ে ওঠা বা ব্যায়ামের মতো শারীরিক পরিশ্রমের সময় শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
- সোজা হয়ে শুতে অসুবিধা (অর্থপনিয়া): সমতলে শুয়ে থাকলে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। আরামের জন্য বালিশ দিয়ে উঁচু হয়ে শুতে হতে পারে।
- রাতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট (প্যারোক্সিজমাল নক্টার্নাল ডিসপনিয়া): ঘুমের মধ্যে হঠাৎ শ্বাসকষ্টে ঘুম ভেঙে যেতে পারে, এবং বসে থাকলে তা কিছুটা আরামদায়ক হতে পারে।
- তীব্রতা: শ্বাসকষ্ট খুব হালকা থেকে শুরু করে অত্যন্ত অস্বস্তিকর হতে পারে যা আপনার দৈনন্দিন কার্যকলাপকে সীমিত করে দিতে পারে।
পায়ে ফোলা
- ফোলার স্থান: পায়ে, গোড়ালিতে এবং পা এর নিচের অংশে ফোলা বেশি লক্ষণীয়। তীব্র ক্ষেত্রে, তরল জমার কারণে পেটও ফুলে যেতে পারে।
- দিনের বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তন: দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে বা বসে থাকার পরে দিনের শেষে ফোলা আরও বেড়ে যায় এবং সমতলে শুয়ে থাকার ফলে তা রাতে কিছুটা উন্নতি করতে পারে।
- অন্যান্য লক্ষণ: ফোলা চামড়া টানটান, প্রসারিত বা স্পর্শে উষ্ণ বোধ করতে পারে। ফোলা জায়গায় চাপ দিলে কিছুক্ষণের জন্য একটি খাঁজ বা ‘গর্ত’ তৈরি হতে পারে।
ক্লান্তি
- স্বাভাবিক ক্লান্তির চেয়েও বেশি: হার্টের সমস্যা সংক্রান্ত ক্লান্তি শুধু ক্লান্ত বোধ করার চেয়ে আলাদা। এটি একধরণের অবিরাম, শরীরব্যাপী ক্লান্তি যা বিশ্রাম নিলেও অতটা সহজে উন্নতি করে না।
- দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব: পোশাক পরা, অল্প দূরত্ব হাঁটা বা গোসল করার মতো সহজ কাজগুলোও ক্লান্তিকর হয়ে উঠতে পারে।
- মানসিক ক্লান্তি: শারীরিক দুর্বলতার সাথে সাথে, মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ হ্রাসের কারণে মনোযোগ দেওয়ার ক্ষমতা কমে যেতে পারে অথবা “ব্রেইন ফগ” এর মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন
অনিয়মিত হৃৎস্পন্দনের ধরণ
- বুক ধড়ফড় করা: মনে হতে পারে আপনার বুক কাঁপছে, হৃৎস্পন্দন এড়িয়ে যাচ্ছে, অথবা খুব জোরে বা দ্রুত ধুকছে।
- ট্যাকিকার্ডিয়া: অস্বাভাবিকভাবে দ্রুত হৃৎস্পন্দন (প্রতি মিনিটে ১০০ বারের বেশি)।
- ব্র্যাডিকার্ডিয়া: অস্বাভাবিকভাবে ধীর হৃৎস্পন্দন (প্রতি মিনিটে ৬০ বারের কম)।
- সংশ্লিষ্ট সমস্যা: অনিয়মিত হৃৎস্পন্দনের সাথে আপনি মাথা ঘোরা, হালকা বোধ করা, অজ্ঞান হওয়া, শ্বাসকষ্ট বা বুকে ব্যথা অনুভব করতে পারেন।
মাথা ঘোরা বা হালকা লাগা
- ভার্টিগো থেকে আলাদা: হার্ট দুর্বল হওয়ার কারণে মাথা ঘোরা ভার্টিগোর মতো (মনে হওয়া যেন ঘর ঘুরছে) নয়, বরং এটি হালকা বোধ করা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো।
- কখন ঘটে: খুব দ্রুত বসে থাকা বা দাঁড়িয়ে ওঠা, পরিশ্রম করা, বা এমনকি কিছুক্ষণ ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকার ফলে মাথা ঘুরতে পারে।
- গুরুতর ক্ষেত্রে: মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ কমে গেলে, একজন ব্যক্তি সংক্ষিপ্তভাবে জ্ঞান হারাতে পারেন।
গুরুত্বপূর্ণ অনুস্মারক
- এই লক্ষণগুলিকে উপেক্ষা করবেন না: এই লক্ষণগুলি, বিশেষ করে যদি সেগুলি নতুন, খারাপের দিকে পরিবর্তিত হতে থাকে, বা আপনার দৈনন্দিন জীবনে বিঘ্ন ঘটায়, তবে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
- নিজে থেকে রোগ নির্ধারণ করবেন না: অনেকগুলি চিকিৎসাগত শারীরিক অবস্থার কারণে এই লক্ষণগুলি দেখা দিতে পারে। শুধুমাত্র একজন ডাক্তারই সঠিকভাবে কারণ নির্ণয় করতে পারেন এবং তা হৃৎপিণ্ড-সম্পর্কিত কিনা তা নির্ধারণ করতে পারেন।
- প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: দুর্বল হৃৎপিণ্ডের দ্রুত নির্ণয় এবং চিকিৎসা আপনার জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে পারে এবং গুরুতর জটিলতা প্রতিরোধ করতে পারে।
হার্ট দুর্বলের অন্যান্য লক্ষণ
বুকে ব্যথা বা অস্বস্তি
- হার্ট অ্যাটাকের বুকে ব্যথা সবচেয়ে পরিচিত লক্ষণ, তবে এটি হার্ট দুর্বল হওয়ার লক্ষণও হতে পারে।
- বুকে ব্যথা হার্টের পেশীতে রক্ত সরবরাহের অভাবের কারণে হতে পারে।
- বুকে ব্যথা তীব্র বা ধীর হতে পারে, এবং এটি কয়েক মিনিট বা কয়েক ঘন্টা স্থায়ী হতে পারে।
- বুকে ব্যথার সাথে অন্যান্য লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে শ্বাসকষ্ট, বমি বমি ভাব এবং ঘাম।
কাশি
- হৃৎপিণ্ডের সমস্যা ফুসফুসে তরল জমতে সাহায্য করতে পারে।
- ফুসফুসে তরল জমা হলে কাশি হতে পারে, কখনও বা রক্ত মেশানোও।
- শুয়ে থাকার সময় কাশি আরও খারাপ হতে পারে।
- দীর্ঘস্থায়ী কাশি হার্ট দুর্বলের লক্ষণ হতে পারে।
ওজন বৃদ্ধি
- অল্প সময়ের মধ্যে অস্বাভাবিক ওজন বৃদ্ধি হলে তা হার্ট দুর্বলের লক্ষণ হতে পারে।
- হার্ট দুর্বল হলে শরীরে তরল জমা হতে পারে, যার ফলে ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে।
- হঠাৎ ওজন বৃদ্ধির সাথে অন্যান্য লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে পায়ে ফোলা এবং শ্বাসকষ্ট।
করণীয়
উপরের উল্লেখিত লক্ষণগুলো থেকে একটি বা একাধিক উপসর্গ যদি আপনার শরীরে প্রকাশ পায়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে দেরি করবেন না।
পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ডাক্তার সঠিকভাবে হার্টের সমস্যার কারণ নির্ণয় করবেন এবং উপযুক্ত চিকিৎসা প্রদান করবেন।
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
- ভালো খাবার, শক্তিশালী হার্ট: সবজি, ফল, এবং আস্ত শস্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার থাকে যা হার্টের জন্য উপকারী। একইভাবে, চর্বিহীন প্রোটিন আপনার রক্তনালীগুলি তৈরি এবং মেরামত করার জন্য ব্লক সরবরাহ করে।
- ক্ষতিকারক খাবারের প্রভাব: অস্বাস্থ্যকর চর্বি (স্যাচুরেটেড এবং ট্রান্স ফ্যাট) এবং প্রক্রিয়াজাত খাবারে থাকা উচ্চ পরিমাণ লবণ এবং চিনি কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে পারে, রক্তচাপ बढ़ा सकता है, এবং হার্টের সমস্যার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।
নিয়মিত ব্যায়াম
- হার্টকে শক্তিশালী করে তোলে: ধারাবাহিক মাঝারি-মাত্রার ব্যায়াম, আপনার হার্টকে অধিক দক্ষভাবে রক্ত পাম্প করতে সহায়তা করে। এটি রক্তচাপ কমাতে, ‘ভালো’ কোলেস্টেরল (HDL) বাড়াতে এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে পারে।
- নিষ্ক্রিয়তার দুষ্কৃতি: শারীরিকভাবে নিষ্ক্রিয় থাকা হার্টের সমস্যার অন্যতম প্রধান ঝুঁকির কারণ। বসে বসে সময় কাটানোর পরিবর্তে সক্রিয় থাকুন!
ধূমপান ত্যাগ
- আপনার হার্টের বন্ধু নয়: ধূমপানের মধ্যে থাকা বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ সরাসরি রক্তনালীগুলিকে ক্ষতি করে, কোলেস্টেরলের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করে এবং রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা বাড়ায়। ধূমপান হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি তাৎক্ষণিকভাবে বাড়িয়ে তোলে।
- ত্যাগ করলে সুফল: ধূমত্যাগ হার্টের উপকার করে। ধূমপান-ছেড়ে-দেওয়া ব্যক্তিরা খুব দ্রুত হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে পারেন।
স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা
- হার্টের বোঝা: অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতার অর্থ হল আপনার হার্টকে রক্তপাম্প করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। এটি রক্তচাপ বাড়ায় ও কোলেস্টেরলের মাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
- ছোটো ছোটো পরিবর্তন, বড়ো পার্থক্য: মাত্র কয়েক কிலো ওজন কমালেও হার্টে চাপ কমাতে এবং হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা
- গোপন শত্রু: উচ্চ রক্তচাপ প্রায়শই ‘নীরব ঘাতক’ নামে পরিচিত কারণ এর প্রায় কোনো লক্ষণ থাকে না। তবুও, এটি আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ায়।
- নিয়মিত পর্যবেক্ষণ: আপনার রক্তচাপ নিয়মিত পরীক্ষা করান। যদি এটি উচ্চ হয় তাহলে জীবনধারা পরিবর্তন এবং প্রয়োজনে ওষুধের মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা
- কোলেস্টেরল ব্যাপারটা কী: কোলেস্টেরল প্রয়োজনীয় একটি মোমজাতীয় পদার্থ, কিন্তু ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল (LDL) রক্তে বেশী হলে তা ধমনীতে জমা হয়ে প্লাক তৈরি করে এবং রক্তপ্রবাহ কমিয়ে দেয়।
- চেকআপ এবং ব্যবস্থা নিন: কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করান। খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম এবং প্রয়োজনে ওষুধের মাধ্যমে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা
- শর্করার দুষ্টচক্র: অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস সময়ের সাথে সাথে রক্তনালীর দেয়ালকে ক্ষতি করে এবং কোলেস্টেরল জমে যাওয়ার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।
- নিরাপদ স্তরে রাখুন: নিয়মিতভাবে আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করুন এবং আপনার ডাক্তারের নির্দেশমতো ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
স্ট্রেস ম্যানেজ করুন
- মানসিক চাপের শারীরিক প্রভাব: দীর্ঘস্থায়ী স্ট্রেস স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা বাড়ায়, যা রক্তচাপ, কোলেস্টেরল এবং হার্টের সমস্যার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
- মানসিক শান্তি, হৃদয় স্বাস্থ্য: যোগব্যায়াম, ধ্যান বা রিলাক্সেশন কৌশল হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক ভূমিকা রাখে।
অনুস্মারক
হার্টের সমস্যা প্রতিরোধ এবং প্রাথমিক পর্যায়ে চিহ্নিত করে চিকিৎসা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে হার্ট সংক্রান্ত মৃত্যু, হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের মতো জটিলতা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।